প্যারিস: প্রেমের শহরে আইফেল টাওয়ারের জ্যোতির্ময় রূপ

প্যারিস—নামটিই যেন কবিতার কোনো পঙক্তি কিংবা প্রেমিকাকে সম্বোধন করা এক মায়াময় ডাক। এ শহরে প্রথম পা রেখেই মনে হয়, এটি শহর নয়, প্রেমের মুখচ্ছবি। প্রতিটি গলি, জানালা, ক্যাফে আর বাতি—সবখানেই একধরনের নেশা মিশে আছে, যা সরাসরি হৃদয়ে গেঁথে যায়। সেই মোহজালের চূড়ান্ত প্রকাশ যেন আইফেল টাওয়ার।
প্রথমবার আইফেল টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হলো, এটি কেবল লোহার কাঠামো নয়—এ যেন প্যারিসের আত্মা, প্রেমের এক নীরব ভাষা। যদিও রবীন্দ্রনাথ একে বলেছেন "লৌহকঙ্কাল", কাছ থেকে দেখে মনে হলো, এটি যেন আকাশকে ছুঁয়ে বলছে—‘আমি প্যারিস, আমি স্বপ্ন।’
১৮৮৯ সালে তৈরি এই টাওয়ার একসময় ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ মানবসৃষ্ট স্থাপনা। সময়ের পালাবদলে তার উচ্চতা হয়তো ছাড়িয়ে গেছে অনেকেই, কিন্তু সৌন্দর্য ও আবেগে এখনও সে অমিত।
আইফেল টাওয়ারের পাশেই শান্তির দেয়াল। কাঠ, কাচ ও লোহার এই স্থাপনায় ৪৯টি ভাষায় লেখা ‘শান্তি’ শব্দ যেন বিশ্বমানবতার এক মূর্ত প্রতীক। যদিও আজ আর দর্শনার্থীরা দেয়াল ছুঁয়ে দেখতে পারেন না, তবু তার বার্তা বাতাসে ছড়িয়ে থাকে।
টাওয়ারের চূড়ায় উঠে প্যারিস শহরকে দেখে মনে হলো—এ এক মহাকাব্যিক দৃশ্য। ছাদগুলো যেন প্রেমের গানে সুর বাঁধছে, আর দূরে ধীরে বইছে সিন নদী, যাকে ঘিরে শতাব্দীর গল্প।
সূর্য ডোবার পর টাওয়ারের গায়ে জ্বলে ওঠা হাজারো বাতি যেন এক নতুন মোহ তৈরি করল। লোহার কাঠামো নয়, যেন এক জ্যোতির্ময়ী নারী শহরের বুকজুড়ে প্রেমের ঘোষণা দিচ্ছে।
টাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধ দম্পতির চোখে ভালোবাসা দেখে মনে হলো—শত বছর পেরিয়েও প্যারিস প্রেমেরই শহর, আর আইফেল টাওয়ার সেই প্রেমের এক অমর মিনার।
মা/ম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: