প্রতি ১০ মিনিটে প্রেমিকের হাতে খুন হচ্ছেন ১ জন নারী

নিজ বাড়িতেও নিরাপদ নন একজন নারী। নিজের কাছের মানুষরাও যেন তার জন্য বিপদ। কয়েক দশক ধরে খুন হওয়া নারীদের অধিকাংশই তাদের ভালোবাসার মানুষ বা স্বজন দ্বারাই খুনের শিকার হয়েছেন। অবাক লাগলেও জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন এমনটাই উদ্বেগজনক তথ্য বলছে।
বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে ১ জন নারী তার ভালবাসার মানুষ কিংবা পরিবারের সদস্য দ্বারা এভাবেই প্রাণ হারাচ্ছেন। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ঘণ্টায় ৬ জন এবং প্রতিদিন গড়ে ১৪০ নারী ঘনিষ্ঠ মানুষের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন। ‘ফেমিসাইড ২০২৩ : ঘনিষ্ঠ সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নারীর হত্যার বৈশ্বিক পরিসংখ্যান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএনওমেন এবং মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর ইউএনওডিসির যৌথ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০২৩-এই ৫১ হাজার ১০০ নারীকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে। যাদের ঘাতক ছিল হয় তাদের প্রেমিক নতুবা পরিবারের সদস্য। এ সংখ্যা আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ছিল ৪৮ হাজার ৮০০।
জাতিসংঘের দুটি সংস্থার জোর দাবি, ‘সর্বত্র নারী ও কিশোরীরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে এবং কোনো অঞ্চলই আর বাদ নেই। নিজেদের বাড়ি নারী ও মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান।’
ইউএন ওমেনের উপনির্বাহী এক্সিকিউটিভের বলেন, ‘সংকীর্ণ লৈঙ্গিক মনোভাব আর সামাজিক নিয়মের মতো স্থায়ী সামাজিক সমস্যাগুলো এর বড় কারণ। এসব হত্যাকাণ্ড নারীর ওপর ক্ষমতা প্রয়োগের সঙ্গে জড়িত।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ৮৫ হাজার ফেমিসাইডের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোয় নারীদের ওপর এমন ঘটনা বেশি, নিহতের সংখ্যাও বেশি।
২০২৩ সালে আফ্রিকায় ২১ হাজার ৭০০ নারী ও মেয়ে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও স্বজনদের হাতে খুন হয়েছেন। যার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ঘটেছে প্রেমিক বা পরিবারের সদস্যদের হাতে। এশিয়ায় এ সংখ্যা ১৮ হাজার ৫০০, আমেরিকায় ৮ হাজার ৩০০ এবং ইউরোপে ২ হাজার ৩০০।
২০২৫-এ এসেও এই সংখ্যা আরও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেন্ডার সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনগত প্রতিকার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের মাধ্যমেই এরকম অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে।
মা/ম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: