sportsmaster@gmail.com রবিবার, ৩রা আগস্ট ২০২৫
১৯শে শ্রাবণ ১৪৩২

মহররম ও আশুরার ফজিলত!

প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১৮:০৭ পিএম

ফাইল ছবি

আরবি পঞ্জিকার প্রথম মাস মহররম। মহররম আরবি শব্দ। এর অর্থ ‘সম্মানিত’। ইসলামের ইতিহাসে এ মাসের সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এ কারণে এ মাসকে সম্মানিত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হাদিসে মহররম মাসকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা আল্লাহর মাস বলা হয়েছে। (মুসলিম : ১১৬৩)

মূলত মহররম মাসকে অধিক ফজিলতপূর্ণ বোঝাতে একে আল্লাহর মাস হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কোরআনের ভাষায় এটি ‘আরবাআতুন হুরুম’ বা সম্মানিত চারটি মাসের মধ্যে একটি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২। এর মধ্যে চারটি মাস (মহররম, রজব, জিলহজ ও জিলকদ) সম্মানিত।’ (সুরা তাওবা : ৩৬)

হাদিসে এ মাসের নফল সিয়ামকে সর্বোত্তম নফল সিয়াম বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হচ্ছে রাত্রিকালীন নামাজ।’ (মুসলিম : ১১৬৩)

বিশেষ করে আশুরার দিনের অর্থাৎ মহররমের দশম দিনের আমল সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই আশুরার দিনে নানা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মুসলমানেই শুধু হোসাইন (রা.)-এর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আশুরার দিন পালন করে থাকেন। অথচ এ ঘটনার আগেও ইসলামের ইতিহাসে আশুরার দিনে অনেক ঘটনা ঘটেছে।

আশুরার রোজা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহর কাফফারা। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালার কাছে আশা পোষণ করি যে তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (মুসলিম : ১১৬২)

নবীজি (সা.) আশুরার দিনের রোজা কোনো দিন ছেড়ে দেননি। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে আশুরার দিনে রোজা পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘এ দিন ছাড়া আল্লাহর রাসুল (সা.) কোনো দিনকে অন্যদিনের তুলনায় উত্তম মনে করে সেদিন রোজা পালন করেছেন বলে আমার জানা নেই। অনুরূপভাবে রমজান ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো মাসকে অন্য মাসের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে রোজা পালন করেছেন বলেও আমার জানা নেই।’ (মুসলিম : ১১৩২)

নবীজি (সা.) হিজরতের পর মদিনায় এসে দেখতে পান, ইহুদিরাও এই দিন রোজা রাখছে। এর কারণ জানতে পারলেন, এই দিনে মুসা (আ.) তাওরাত কিতাব লাভ করেন। এ দিনেই তিনি বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার করে নীল নদ অতিক্রম করেন এবং ফেরাউনের সলিলসমাধি ঘটে; তাই তারা এদিন রোজা রাখে। নবী (সা.) বললেন, ‘আমরা মুসার অধিক আপন, তোমরা ইহুদিদের ব্যতিক্রম করো, আশুরার এক দিন আগে বা এক দিন পরও রোজা রাখো।’ (মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম ও আবু দাউদ)

এ হাদিসের আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ১০ মহররমের রোজা রাখবে, তার সঙ্গে অন্যদিন অর্থাৎ ৯ কিংবা ১০ তারিখ রোজা রাখা বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ যাতে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সঙ্গে সামঞ্জস্য না হয়ে যায়, সে জন্য আশুরার রোজার সঙ্গে মিলিয়ে মোট দুটি রোজা রাখা মুস্তাহাব। কেননা ইহুদিরা শুধু আশুরার দিনেই রোজা রাখত। 

শা/আ/দি

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর