থ্রি ‘জিরো’ লক্ষ্য অর্জনের জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ—এই তিনটি মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরিতে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন (আইএসবিএস) ২০২৫’-এ তিনি এই আহ্বান জানান। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল: “মুসলিম বিশ্বের তিনটি শূন্য অর্জনে এনজিও নেতৃত্ব”।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এই তিনটি শূন্য অর্জন করতে হলে কেবল প্রচার নয়, প্রয়োজন আন্তরিকভাবে সামাজিক দায়িত্ববোধের অনুশীলন। মুসলিম বিশ্বকে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রকৃত সামাজিক ব্যবসার মডেল গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ইসলাম নিছক ধর্মীয় আচার নয়, এটি ন্যায়ের পক্ষে এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়। মুনাফার নামে কষ্ট না বাড়িয়ে আয়কে সমাজের কল্যাণে ব্যবহার করার শিক্ষাও ইসলাম দেয়।
বিশ্বজুড়ে মানবিক সংকট, বিশেষ করে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুসলিম রাষ্ট্রগুলো কেন নীরব থাকে? নৈতিক সাহস ছাড়া ভ্রাতৃত্ববোধের কোনো মানে হয় না। আমরা মূল্যবোধের কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে তা প্রয়োগ করি না—এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।”
তিনি বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে বলেন, “আধুনিক পুঁজিবাদ প্রকৃতি ও সমাজকে ধ্বংস করছে। এখনই যদি আমরা অর্থনীতির ভিত্তি পরিবর্তন না করি, তাহলে জলবায়ু সংকটে আগামী শতকের শেষ নাগাদ বহু দেশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে।”
রিজওয়ানা হাসান ভোগবাদের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “প্রয়োজন ও অতিরিক্ত চাহিদার পার্থক্য বুঝতে শিখতে হবে। যুদ্ধ নয়, আমাদের এখন দরকার শান্তি—চিরস্থায়ী শান্তি।”
তিনি ইসলামি অর্থনীতির একটি পরীক্ষিত উপাদান হিসেবে জাকাত ব্যবস্থাকে তুলে ধরেন এবং বলেন, “আধুনিক কর ব্যবস্থায় কর দিলে সেটা সাধারণ মানুষের কল্যাণে কতটা ব্যবহার হয়, তা প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু জাকাত সরাসরি দরিদ্রদের সেবা দিতে পারে।”
সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “ঘৃণার বদলে বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করা মানবতার পথ। আমাদের উচিত সহানুভূতির জায়গা থেকে কথা বলা এবং সব সম্প্রদায়কে সম্মান দেখানো।”
মা/ম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: