sportsmaster@gmail.com রবিবার, ৩রা আগস্ট ২০২৫
১৯শে শ্রাবণ ১৪৩২

বিশ্বজুড়ে চিন্তার ঝড়: নজরুলের চেতনায় আজকের বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৫ ২০:০৭ পিএম

ফাইল ছবি

বাংলা সাহিত্যের বীর বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু উপনিবেশ-বিরোধী গীতচয়নেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। তিনি ১৮৯৯ সালে জন্ম নিয়ে জাতিকে গৌর্বর নতুন দিশার পথ দেখিয়েছেন, যেটি ভেঙ্গেছে ‘বেঙ্গল রেনেসাঁ’-র একচেটিয়া বিবর্তনের আড়াল।

নবজাগরণের নিচু স্তর থেকে চিরবিদ্রোহীর উত্থান
১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ থেকে শুরু হওয়া ব্রিটিশ–শিক্ষিত ‘বেঙ্গল রেনেসাঁ’ যদিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, তবে দেশজাগরণের যথার্থ আত্মপ্রকাশ আসে নজরুলের কবিতায়।

১৮৯৯–১৯২১, নজরুলের প্রস্তুতি কাল—যেখানে তিনি রাজনীতির গান, বিপ্লবের উন্মাদনা ও শোষণমুক্তির যুদ্ধ-কণ্ঠ তৈরি করেন। চাকুরি নয়, স্বাধীনতার আন্দোলন ছিল তার মনোনয়ন পত্র।

কবিতায় ও গানে “বিদ্রোহের কণ্ঠস্বর”
১৯২২–তেওকার অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের সময় নজরুল বাংলা সাহিত্যে আগুনের দানা বপন করেন। “বিদ্রোহী” কবিতাগ্রন্থ ও “দি তুফান”–এর মতো প্রকাশনায় তিনি ইংরেজি–ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

রবীন্দ্রনাথ, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ও মওলানা ভাসানী–সহ বহু নেতা তাঁকে “জাতির প্রার্থিত কবি” হিসেবে অভিহিত করেন, কারণ 'নজরুলের গান দিয়ে যুদ্ধে যাব'—এই সংকল্প কর্মী ও সাধারণ মানুষদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

রাজনীতিতে সাহিত্যের প্রবল ক্ষমতা
১৯২৯ সালে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে তাঁকে “জাতীয় কবি” হিসেবে সম্মান জানানো হয়। সেখানে প্রফুল্লচন্দ্র রায় বলেন,

“নজরুলের গানের মতো পাঠগ্রহণ করলে জনগণ একদিন অতি মানবে পরিণত হবে।”
নেতাজিরাও স্বীকার করেন, “যুদ্ধ–কারাগার–সংগ্রামে নজরুলই আমাদের রণাঙ্গনের আত্মার কবিতা।”

সাহিত্যে সামাজিক-রাজনৈতিক সংস্কার
নজরুল না থাকলে বাংলা সাহিত্যে “ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণতা” আজ এইভাবে সাহিত্যে, সংগীতে, রাজনীতিতে জাগ্রত হত না। তিনি পুরোনো সাহিত্যকে ভেঙে নতুন দৃঢ় ভিত্তির দিকে এগিয়ে গেলেন—যা ছিল গণমানুষ ভিত্তিক, সংগ্রামমুখী ও দেশপ্রেমিক।

জাতির সংকটময় মুখে তিনি বিশাল আর দীর্ঘ অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধেও, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে তাঁর গান ছিল ‘চেতনার গান’ হিসেবে আদর্শ।

বিশ্ব-সাহিত্যে নজরুলের অপরিসীম অবদান
কবিতার ছন্দ: ‘বিদ্রোহী’–এর মতো পাবলিক চেতনার কবিতা ছাড়া বাংলা সাহিত্যের মঞ্চ অপরিপক্ব হতো।

সাহিত্য–সংগীতে বৈচিত্র: অগ্নিশিখার মতো দ্রুত ১৮টি নতুন রাগ সৃষ্টি—যা আজ বিশ্ব মঞ্চেই স্বীকৃত।

সামাজ ও রাজনীতিতে ভুমিকা: কবি, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, নাট্যকার—বিশ্লেষকরা বলছেন, “ধূমকেতু–লাঙল” বলেছে নবায়নের স্বর।

 

মা/ম

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর