প্রথমবারের মতো সুইজারল্যান্ডে গেল হিলির আম!

গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস (গ্যাপ) বা উন্নত কৃষি পরিচর্যা পদ্ধতিতে আম চাষ করে প্রথমবারের মতো বিদেশে রপ্তানি করেছেন জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হাকিমপুরের কৃষক ।
উত্তরের জনপদ দিনাজপুর কৃষি নির্ভরশীল হলেও লিচু উৎপাদনে এই জেলা দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এবছর জেলার বিভিন্ন স্থানে সৃজন করা হয়েছে উন্নত জাতের আম বাগান। এ বাগানগুলোতে গ্যাপ পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন হাকিমপুর উপজেলার গোহাড়া গ্রামের কৃষক আম চাষি নিরঞ্জন চন্দ্র রায় (৪০)।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, গ্যাপ পদ্ধতি বলতে, উন্নত কৃষি পরিচর্যা বা গুড এ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস বোঝানো হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ফল একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পরিণত হওয়ার পর গাছে থাকা অবস্থায় বিশেষ ধরনের ব্যাগ দিয়ে ফলকে আবৃত করা হয়। ব্যাগিং করার পর থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত গাছেই লাগানো থাকে ব্যাগটি। এই পদ্ধতিতে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও বিদেশে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন করা যায়। এছাড়া বালাইনাশক ব্যবহার ছাড়াই শতভাগ রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণমুক্ত আম পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘গ্যাপ পদ্ধতিতে ব্যাগিং করলে বালাইনাশকের ব্যবহার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে যায়। যে কোনো জাতের আমের ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও হলুদাভ করা যায় এবং আমের সংরক্ষণকাল বাড়ানো যায়। যা রপ্তানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, জেলার হাকিমপুর হিলি সদর থেকে আড়াই থেকে তিন কিঃমিঃ পূর্বে পৌর শহরের গোহাড়া গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন চন্দ্র রায় উন্নত জাতের বারি-৪ আম চাষ করেছেন। গ্যাপ পদ্ধতি অনুসরণ করে এক একর জমিতে বারি-৪, গৌরমতি ও আম্রপালি জাতের আম চাষ করে তিনি সফল হয়েছেন।
তিনি জানান, ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ-পার্টনার এবং ক্লাস্টার ডেমোনস্ট্রেশন ফর গ্যাপ স্ট্যান্ডার্ড অব ফ্রুটস’ প্রকল্পের আওতায় এই কৃষক আম বাগান করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ জানায়, হাকিমপুর উপজেলায় এই প্রথম বারি-৪ আম বিদেশে রপ্তানি শুরু করা হয়েছে। নিরঞ্জনের আম বাগান থেকে এ পর্যন্ত ২ মেট্রিক টনের অধিক আম সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
শা/আ/দি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: