sportsmaster@gmail.com রবিবার, ৩রা আগস্ট ২০২৫
১৯শে শ্রাবণ ১৪৩২

নিজ উদ্যোগে সৌদি খেজুরের বাগান করলেন সিরাজুল

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৫ ২০:০৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের জি এম সিরাজুল ইসলাম। তার বাগানে একটি গাছে থোকা থোকা সৌদি খেজুর ধরেছে। বিচিত্র রঙের খেজুরের সেই বাগান দেখতে প্রতিদিনই আসছেন অনেকে। উপজেলার হওয়ালভাঙ্গী গ্রামের এই বাসিন্দা নিজ উদ্যোগে তার খেজুরবাগান গড়ে তুলেছেন।

শ্যামনগর-নওয়াবেঁকি সড়কের পাশে আট বিঘা জমি রয়েছে তার। সেখানে মাছ চাষের পাশাপাশি চাষ করছেন কয়েক ধরনের সৌদি খেজুর। চার বছর আগে রোপণ করা গাছগুলোর মধ্যে নয়টিতে এবার ফল ধরেছে।

তার জন্ম ১৯৭১ সালে। পেশায় জুয়েলারি ব্যবসায়ী হলেও তিনি ২০১১ সালে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি খেজুরের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তাঁর।

চার বছর আগে এক বিঘা জমিতে ২০টি সৌদি খেজুরগাছ লাগান সিরাজুল। এবার ফল এসেছে নয়টি গাছে। তার বাগানে আছে মেডজুল, আজওয়া, মরিয়ম ও আম্বার ইত্যাদি বিভিন্ন জাতের খেজুর।

এসব গাছে ৮০ থেকে ১০০ কেজি খেজুর হবে। ছোট একটি খালে মাছ চাষও করেন তিনি। তার পাশেই আরও ২৫০টি খেজুর গাছের চারা রোপণ করেছেন এক বছর আগে।

বাগান তৈরি থেকে মোট খরচ হয়েছে প্রায় চার লাখ টাকা। আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর বিক্রি করবেন তিনি।

বর্তমানে সিরাজুলের বাগানে খেজুরের প্রায় ৩০০টি ছোট চারা আছে। নিজেই সেগুলোর কলম তৈরি করেন। প্রথমে তিনি চারা তৈরিতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে একেকটি চারা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও এখন বিক্রি করেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। আবার অনেকে বিনা পয়সায়ও পান। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের আফজাল হোসেন ৩০টি চারা কিনলেন ৫০০ টাকা করে। আরেকজন ২১টি চারা কিনতে অগ্রিম বায়না করলেন।

তবে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সৌদি খেজুর চাষ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার ধারণা দিতে পারছে না। সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি অফিসে অনেকবার গিয়েছি। তারা দেখে গেছেন, কিন্তু পরামর্শ দিতে পারেননি। আমি নিজেই বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করি।’

শ্যামনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা মনে করেন সৌদি খেজুর চাষ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি আদর্শ কি না, তা নিশ্চিত না হয়েই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। উত্তরাঞ্চলে এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, টাঙ্গাইলে বড় পরিসরে খেজুর চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। তবে শ্যামনগরে উৎপাদিত খেজুরের স্বাদ ভালো এবং বাজারে তা ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এমএসএস

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর